একুশ শতক
প্রাযুক্তিক সভ্যতার ইতিহাসভাঙ্গা
উৎকর্ষের দিনরাত
জৈবনিক বিলাসিতার উন্নততম সংস্করণ
আর মানবিক সভ্যতার চরম ক্রান্তিকালের
নাম একুশ শতক
এই শতকের এই সময়ের নষ্ট পৃথিবীর এক দুষ্ট
সদস্যের নাম মায়ানমার
এই নষ্ট দেশের হতভাগা এক জাতির নাম
রোহিঙ্গা
রোহিঙ্গা নর্দমার কোনো কীট নয়
নয় কোনো সোপ্রদব হিংস্র জন্তুর নাম
রোহিঙ্গা একটি জাতির নাম
রোহিঙ্গা একটি সভ্যতার নাম
রোহিঙ্গা একটি ইতিহাসের নাম
রোহিঙ্গা সেটা মানুষের নাম
রোহিঙ্গা সে তো মুসলমানের নাম
রোহিঙ্গা আমার ভাই, রোহিঙ্গা আমার
বোন, রোহিঙ্গা হচ্ছি এই আমি
এই আমিই রোহিঙ্গা।


চোখ বন্ধ করো
দ্যাখো, তেড়ে আসছে বৌদ্ধ
জানোয়ার
পৃথিবীর নিকৃষ্টতর বর্বর মানুষখেকো জাতি
বার্মিজ বুদ্ধিস্ট
গৌতমের জারয সন্তান
হাতে তার অস্ত্র, গোলাবারুদ, শক্ত রশি,
জিঞ্জির, ছোরাচাকু আর পেট্রোলের
বোতল
দ্যাখো, মুহূর্তেই আকাশ হয়ে উঠছে
ধোঁয়াচ্ছন্ন
পাহাড়ের মতো উঁচু উঁচু আগুনের চুল্লু
ওরা পেট্রোল ঢেলেছে মানুষের ঘরে,
ধরিয়েছে আগুন
এখন জ্বলে পুড়ে ছারখার হচ্ছে গ্রামের
পর গ্রাম
পুড়ছে মানুষের স্বপ্ন, ধ্বংস হচ্ছে সংসার
পড়িমরি বেরিয়ে পড়ছে নারী শিশু বৃদ্ধসহ
উদ্বাস্তু মানুষের ঢল
শক্ত রশি আর জিঞ্জিরে বাধা পড়ছে গরু
ছাগলের মতো মানুষের পাল
এর পর, ইচ্ছেমতো ওরা
জীবন্ত মানুষকে ঢেলে দেয় দাউ দাই
আগুনের কূপে
বৃদ্ধার কাপড়ে ধরায় আগুন
পেট্রোল টায়ার আর কাপড়ের সাথে
একতালে জ্বলতে থাকে একবিংশের
সভ্যতা
উলঙ্গ যুবতির পেটে ঝাঁপিয়ে পড়ে
হায়েনার দল একের পর এক
কেটে ফেলে জীবন্ত যুবতীর উদ্ধত স্তন
গরুর মাংসের মতো কেটে নেয় জীবন্ত
মানুষের মাংসল নিতম্ব
খসিয়ে নেয় নিহত পশুর মতো জীবন্ত
মানুষের শরীরের চামড়া
এখানে ওখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে
নারী-পুরুষ শিশু বৃদ্ধের কর্তিত মস্তক
যন্ত্রণায় মুসড়ে পড়ে আকাশ বাতাস
বেদনায় কাতরে ওঠে রাতের অাঁধার, অটল
পাহাড়
চোখ বন্ধ করো
দ্যাখো, নাফ নদী হয়ে বঙ্গোপসাগরের
বিবর্তিত রঙ
দ্যাখো, ভাসমান মানুষের লাশ
দাড়হীন হালহীন নিরুদ্দেশ নৌকাগুলো
দ্যাখো, ক্ষুধার্ত পিপাসার্ত নিবস্ত্র নৌ-
আরোহীর ঢল
মাঝনদে ভূমিষ্ট শিশুর হাড়কাঁপা অভিষেক
কান খোলো, শোনো,
বাতাসে ভেসে ওড়া লজ্জিত মানবতার
হাহাকার
শোনো শিশুর কান্না, মায়ের
বুকচাপড়ানো, বাবার আহাজারি, বোনের
আর্তনাদ, ভাইয়ের হাহুতাশ, সভ্যতার
গোঙানি, হিউম্যানিটির রোনাজারি,
ইতিহাসের কাতরানি
শোনো হারানোর কান্না, হারিয়ে
যাওয়ার কান্না, হেরে যাওয়ার কান্না,
অসহায়ত্বের কান্না, অসহযোগের কান্না
শুঁকো, বাতাসে ভেসে আসা জীবন্ত
মানুষের মাংসপোড়ার গন্ধ, রক্ত পচার গন্ধ,
ভস্মচুলের গন্ধ, শুকনো অশ্রুর গন্ধ, ইতিহাস
দাহের গন্ধ, পশুপাখি জীব জন্তু সবুজ শ্যামল
জ্বলে যাওয়ার গন্ধ
চোখ খোলো
দ্যাখো, কোনো অন্ধকার যুগে নয়
বিশ্বায়নের আলোকধাঁধাঁয় উজ্জ্বল
একবিংশের দুপুরে চলছে এ গণহত্যা
জীবন্ত মানুষের শায়িত সারির উপর
দাবড়ে যাওয়া দৈত্য ট্রাক, ট্যাংকলরি
আর সেসবের পিঠে চড়ে রক্তে মাতাল
বৌদ্ধদের উন্মত্ত উল্লাস
গৌতম বুদ্ধের শৌর্যমণ্ডিত বিশ্ববেশ্যা
অংসান সুচির কোনো এক ররাতের
বিনিময়ে লব্ধ শান্তির নর্তন কুর্দন
দ্যাখো,
নষ্ট রাজনীতির গোলাম জাতিসংঘ
নামের ধ্বজভঙ্গ
ওআইসি নামের শঠসংঘ
মুসলিম নামি মুনাফিক রাষ্ট্রপ্রধান
রোহিঙ্গাদের পোড়া মাংসের ভাগ
নিতে মুখে আজ এঁটেছে তারা ছিপি
কোথায় আজ মানবাধিকারের একচোখা
প্রভুরা?
কোথায় আজ সুশীল টকমারানিরা?
কোথায় আজ গণতন্ত্রের
জারযসন্তানেরা?
কোথায় আজ পশুপ্রেমি মানবতাবাদীরা ?
যারা মুখ বুজে আছো, তোমরা হলে বোবা
শয়তান
যারা দুঃখ প্রকাশেই ক্ষ্যান্ত দিয়েছো
তোমরা মানবমাংসখেকো নিকৃষ্টতর
হিংস্র জানোয়ার
তোমরা চরম স্বার্থকানা তোরা বোবা
শয়তান
মানবজাতির শত্রু তোমরা হয়ে গেছে এই
জ্ঞান
মুসলিম নামি মুনাফিক যতো আরবি আজমি
নেতা
বিশ্বজাতি জেনে গেছে আজ
তোমাদের কপটতা
এক আল্লায় বিশ্বাসি চির উন্নত এক জাতি
মুসলিম মোরা সইবোনা আর কাফেরের
বজ্জাতি
রোহিঙ্গারা আমারই অঙ্গ আমাদেরই ওরা
জ্ঞাতি
তারও চেয়ে বিশি বড় কথা হলো মনষ্য
পরিচিতি
জেগে ওঠো সবে ফুরসত নেই আজ আর
ঘুমাবার
শ্লোগানে শ্লোগানে সামনে চলো
আল্লাহু আকবার
মানবতাকে মক্ত করতে চলো আজ দুর্বার
একসাথে সবে শ্লোগান তোলো আল্লাহু
আকবার
রোহিঙ্গাদের মুক্ত করতে চলো পথে
বার্মার
নির্ভীক চিতে শ্লোগান তোলো
আল্লাহু আকবার।