সোহাগ মিয়া:: আমি তখন নতুন ঢাকায় এসেছি। ২০১০ সালের কথা। টুকটাক সিম্বিয়ান ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করা থেকে বের হয়ে হাতে কম্পিউটার আর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ পেলাম। অনেক দিন খাঁচায় বন্দী থাকা পাখীকে ছেড়ে দিলে যেমন তীব্র বেগে উড়ে যায়, ঠিক তেমন অনুভূতি ছিল তখন। ইন্টারনেটের স্পীড ছিল মাত্র ১২৮কেবিপিএস, তখন সেটিই ছিল আমার জন্য অনেক ফাস্ট, তাও আবার আনলিমিটেড ডাউনলোড! শুরু হল পছন্দের সব মুভি গুলো হাই কোয়ালিটিতে ডাউনলোড করার পালা। জানিয়ে রাখা ভালো, ডাউনলোড কেবল ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট প্রভাইডারের FTP সার্ভার থেকেই করতাম। গান, মিউজিক ভিডিও আর গেমস ডাউনলোড করতে করতে মাসখানেকের মধ্যেই আমার ল্যাপটপের ২৫০ জিবি হার্ড ডিস্ক ফুল করে ফেলি। এবার শুরু হয় জটিলতা, কোনটা রেখে কোনটা কাটবো বুঝেই উঠতে পারছিলাম না। এভাবেই আনন্দে কাটলো প্রথম ছয় মাস। তবে নতুন জিনিষ শিখার প্রতি আমার আগ্রহ ছিল তীব্র। সুযোগ পেলেই নানান বিষয় ইন্টারনেটে সার্চ করতাম। তখন গুগল ছিল (এখনো আছে) আমার নিত্য দিনের সঙ্গী। নানা বিষয় নিয়ে ইন্টারনেটে প্রচুর পড়াশোনা করতাম। তখন আমার ইউটিউবে ভিডিও দেখার মতো ইন্টারনেট স্পীড ছিল না। তাই বাংলা ইংরেজি ব্লগ গুলো পড়তাম। পড়তে পড়তে জানতে পারলাম যে ইন্টারনেটে ঘরে বসে আয় করা যায়। লেগে পরলাম আয় করার পেছনে। শুরু হল আমার জীবনের নতুন এক অধ্যায়, যার মাধ্যমে একসময় পাল্টে যায় সবকিছু।
সেসময় বাংলাদেশে খুব অল্প মানুষ ছিল যারা সফল ভাবে ইন্টারনেটে আয় করত, আর থালেও তাদের দেখা পাওয়া যেত না খুব একটা। অনেক খুঁজেও কাউকেই পাইনি যে আমাকে সামনে বসে বা ফোনে একটু গাইডলাইন দেবে। বাধ্য হয়ে প্ল্যান করলাম যে সব গুগল থেকেই শিখবো। “How to income from internet” – এরকমভুল ইংরেজি লিখেই সার্চ দেই গুগলে, আর গুগল মামাতো সবজান্তা! সে বুঝে গেলো আসলে আমি কি বুঝাতে চেয়েছি। অনেক রেসাল্ট আসলো যার মধ্যে কোনটাই বাংলা ছিল না। ইংরেজি আর্টিকেল গুলোও ছিল অনেক কঠিন। ক্লাসে ইংরেজিতে বরাবরই ভালো মার্ক পেতাম, একটু আধটু ইংরেজি বলেও ফেলতাম, কিন্তু বিদেশীদের ইংরেজি পড়ে ৩০-৪০ ভাগ বুঝতাম বাকি সব মাথার উপর দিয়ে যেতো। মাঝে মাঝে ডিকশেনারি দেখে শব্দার্থ বের করে পুরো লাইনের অর্থ বের করতাম। পড়তে পড়তে অনেক ওয়েব সাইট সম্পর্কে জানতে পারলাম যারা নাকি শুধু ক্লিক করলেই টাকা দেয়। যেগুলোকে আমরা PTC সাইট বলি। দিন রাত এক করে বসে বসে সেই সাইট গুলোতে থাকা বিজ্ঞাপনে ক্লিক করতাম আর স্ক্রিনে দেখতাম আমার ডলার। আর মনে মনে নানা রকম স্বপ্ন বুনতাম। কিন্তু যখন ডলার উঠাতে যেতাম তখন যে কি সব অপশন দিতো বুঝতামই না। পাশে কোথাও মাস্টারকার্ডের কথা লিখা ছিল তাই ছুটে গেলাম ব্যংকে। ব্যংকের লোককে আমি যে সাইটে কাজ করি সেই সাইটের নাম বললাম আর জিজ্ঞেস করলাম আমি এই সাইট থেকে টাকা বাংলাদেশে আনবো সেজন্য কোন মাস্টারকার্ড লাগবে? ব্যংকের লোক আমার দিকে কেমন যেন একটা নির্বাক লুক দিলো। বুঝতে পারলাম যে আমি বিষয়টা তাকে বুঝাতে পারি নি। আরও কয়েকবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলাম। এবার দেখি ব্যংকের লোকটা কিছুটা রেগে যাচ্ছে, তাই কেটে পরলাম ওখান থেকে। বাসায় এসে খুব হতাশ হয়ে অন্য আরও সাইটের খোঁজ করলাম সেই সাথে ইন্টারনেটে আয় বিষয়ে বাংলায় কোন আর্টিকেল আছে কিনা খুঁজতে থাকলাম। কিন্তু কোন কিছুতেই লাভ হচ্ছিল না। পরে এক বন্ধুর পরামর্শে নীলক্ষেত থেকে ইন্টারনেটে আয় বিষয়ক একটা বই কিনে আনলাম। বইয়ে নানা রকম পদ্ধতির কথা বলা ছিল সেই সাথে টাকা উঠানোরও কিছু পদ্ধতির বর্ণনা ছিল। কিন্তু ক্ষুদ্র জ্ঞান নিয়ে সেই বইয়ের বর্ণনা কোন ভাবেই কাজে লাগাতে পারছিলাম না। পেপাল একাউন্ট খুলতে গিয়ে কান্ট্রি লিস্টে বাংলাদেশের নামই খুঁজে পাই না, ব্যাংক ওয়্যার ট্র্যান্সফারের সুবিধা কোন সাইটই দিচ্ছিল না। সব মিলে ব্যর্থতার এক বিশাল সাগরে পরে যাই। তবুও হাল ছাড়ি নি, সারাদিন আর সারারাত কাটতো এই ল্যাপটপকে নিয়েই। নতুন নতুন অনেক বিষয় অগোচরেই শিখছিলাম কিন্তু কিছুতেই টাকার মুখ না দেখতে পেয়ে ভাবছিলাম হয়তো পুরো সময়টাই জলে যাচ্ছে।
দিন যেতে থাকলো আর আমার হতাশা বাড়তে শুরু করলো। বছরখানেক এভাবেই চেষ্টার পর চেষ্টা করে কাটালাম। হটাৎ একদিন একটা আর্টিকেল থেকে জানতে পারি যে PTC সহ অন্যান্য সহজে আয় করার বেশীরভাগ সাইট গুলোই বিশ্বস্ত না এবং সেগুলো থেকে দীর্ঘমেয়াদী ইনকাম সম্ভব নয়। সেখানে উল্লেখ করা হয় যে, ইন্টারনেট থেকে আয় করার সবচেয়ে বিশ্বস্ত, কার্যকরী এবং দীর্ঘমেয়াদী মাধ্যম হল গুগল অ্যাডসেন্স। এবং অ্যাডসেন্স থেকে টাকা উঠানোও সহজ। শুরু হল গুগল অ্যাডসেন্স নিয়ে গবেষণা। নাওয়া খাওয়া ছেড়ে লেগে পরি অ্যাডসেন্সের পেছনে। জানতে পারি যে সবচেয়ে বিশ্বস্ত, কার্যকরী এবং দীর্ঘমেয়াদী এই মাধ্যম থেকে ইনকাম করাটাও সবচেয়ে বেশি কঠিন। বইয়ে গুগল অ্যাডসেন্সকে সোনার হরিণ বলে আখ্যায়িত করেছিল যা সবাই পায় না। অ্যাডসেন্সের নাড়ীভুঁড়ি বের করে বুঝতে পারলাম যে এখান থেকে ইনকাম করতে হলে নিজের একটা ওয়েবসাইট থাকবে হবে। শুরু হল ওয়েবসাইট কিভাবে বানাতে হয় তা নিয়ে গবেষণা। ঘুম থেকে উঠে ল্যাপটপ নিয়ে বসতাম মাঝখানে জরুরী কাজ গুলো সেরে ঘুমানোর আগে পর্যন্ত ল্যাপটপ নিয়েই বসে থাকতাম। ওয়েবসাইট বানাতে যে ডোমেইন হোস্টিং আরও কতকি লাগে সেসব বিষয় কোন ভাবেই মাথায় ঢুকছিল না। ঘুরতে ঘুরতে পেলাম ব্লগারের খোঁজ। ব্লগারে ব্লগ খুললাম কোন রকম, কিন্তু কন্টেন্ট কি দিবো খুঁজে পাচ্ছিলাম না। ভাবতে ভাবতে মনে হল এই যে আমার ল্যাপটপে এতো মুভি, গান আর ভিডিও আছে, কেমন হয় যদি এগুলো আমার ব্লগে দিয়ে দেই? কিন্তু ব্লগারেতো গান আর ভিডিও আপলোড করার কোন অপশনই খুঁজে পাই না! ঘাটতে ঘাটতে জানতে পারলাম ভিডিও কিংবা গান অন্য কোন একটা শেয়ারিং সাইটে আপলোড করে সেটার লিঙ্ক দিতে হবে ব্লগে। ফাইল শেয়ারিং সাইট নিয়ে রিসার্চ শেষে সেখানে ফাইল সাইজ এবং লিমিটেড স্টোরেজ নিয়ে পরলাম ঝামেলায়। আর একটা ১০০ মেগাবাইট ফাইল আপলোড হতেই জনম জনম পার হয়ে যেতো। তবুও অনেক কষ্টে আপলোড করে লিঙ্ক গুলো শুধু ব্লগের পোস্টে পেস্ট করে দিতাম। একটা পোস্টে একটা গান। ১০-১২ টা পোস্ট করেই অ্যাডসেন্সের জন্য এপ্লাই করালাম। রিপ্লেতে জানতে পারলাম কোন ধরনের সাবডোমেইন অ্যাডসেন্স এপ্রোভ করবে না (তখন ব্লগারও সাপোর্ট করত না)। নিরাশ হয়ে এবার চেষ্টা শুরু করলাম .কম সাইট ওপেন করার। একবার তখনকার চিন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত সফট এক্সপোতে গিয়ে লোকাল এক ওয়েব সার্ভিস প্রভাইডারের খুঁজ পেলাম । এক বন্ধুকে সাথে নিয়ে পুরো এক মাসের হাত খরচের টাকা দিয়ে ডোমেইন আর হোস্টিং কিনে আনলাম। আনার পর cPanel নিয়ে চলল আরও গবেষণা। কোন দিশা পাচ্ছিলাম না ওয়েবসাইট তৈরি নিয়ে। গবেষণায় উঠে আসলো কোডিং-এর কথা। শিখা শুরু করলাম HTML, CSS আর খুব সহজে ইনডেক্স পেজ বানিয়ে ফেললাম আমাদের ওয়েবসাইটের। হোম পেজে লিখা ছিল Welcome to our website। “marquee” ট্যাগ দিয়ে লিখাটাকে একদিক থেকে অন্যদিক স্ক্রোল করিয়ে রেখেছিলাম। নতুন নতুন HTML ফাইল তৈরি করে একা একটা পেজ বানিয়ে সাইটে আপলোড করলাম। সব গুলো পেজে ১/২ টা করে লাইন লিখা ছিল শুধু। কিছুদিন পরেই বুঝতে পারলাম এভাবে সাইট বানালে কয়েক যুগ পার হয়ে যাবে তবুও আমাদের সাইট কমপ্লিট হবে না। আর তখনি জানতে পারি টেমপ্লেটের কথা। খুঁজে খুঁজে পছন্দ করে একটা ফ্রি টেমপ্লেট ইন্সটল করি। কিন্তু সেটা কাস্টমাইজ করতে গিয়ে ঘাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করলাম। তার উপর কয়দিন পর পর অন্য একটা সুন্দর টেমপ্লেট দেখে চেঞ্জ করে ফেলতাম। কপাল খারাপ যে তখন কোনভাবেই ওয়ার্ডপ্রেসের কথা জানতে পারি নি। আর পড়লেও হয়তো ব্যাপারটা মাথার উপর দিয়েই গেছে। রাতের পর রাত জেগে ওয়েবসাইটের নানা বিষয় নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতাম। মনে আছে, শুধু ড্রপ-ডাউন মেন্যু তৈরি করতে আমার ১৫-২০ দিন সময় লেগেছিল। এভাবে ৩-৪ মাসের মতো ওয়েবসাইট নিয়ে তুমুল পরিশ্রমের পর তৈরি করলাম একটা সাইট যেখানে শেয়ার করতাম নানা রকমের সফটওয়্যার। ইতিমধ্যে কাজ করতে করতে অনেক কিছু শিখেছি, ইংরেজিরও অনেক উন্নতি হয়েছে। খুব আশাবাদী ছিলাম সেবার। এতো কষ্ট বুঝি এবার সফল হবে। নতুন সাইট দিয়ে প্রথম বারের মতো অ্যাডসেন্সে এপ্লাই করলাম।
রেজাল্ট – শূন্য!
গুগল আমাদের সাইট এপ্রোভ করে নি। এবং কিছু ভুল ধরিয়ে দিয়েছে যেগুলো ঠিক করে আবার এপ্লাই করতে বলল। ঠিক করে দ্বিতীয় বার এপ্লাই করলাম, আবার নতুন কিছু ভুল, তৃতীয় বার করলাম, আবারও নতুন কিছু ভুল, চতুর্থ বার করলাম, সেবারও নতুন কিছু ভুল!! এভাবেই চলেছে পরের ২ টি বছর………
তখন মনে হত, জীবন থেকে প্রায় ২ টি বছর উড়িয়ে দিলাম কেবল এক গুগল অ্যাডসেন্সের পেছনে কিন্তু কিছুই পেলাম না। এই ২ বছর কখনোই রাতে ঘুমাই নি। শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিলাম শুধু এই এক অ্যাডসেন্সের পেছনে ছুটে। সাইটে সফটওয়্যার শেয়ারিং বন্ধ করে নায়ক নায়িকার ছবির ডিরেক্টরি বানিয়েছিলাম, বাংলায় আর্টিকেল লিখেছি, ইংরেজিতেও লিখেছি, ফোরাম বানিয়েছি কিন্তু কোন কিছুতেই লাভ হয় না। অ্যাডসেন্স নামের সোনার হরিণের দেখা পেলাম না কোনভাবেই। এদিকে পড়াশোনারও বিশাল ক্ষতি হয়ে গেলো। হতাশা পুরোদমে ঘিরে ফেলে আমায়। এই ভেবে ভালো লাগছিলো যে দিনগুলোতে আমি অনেক কিছু শিখেছি, পরোক্ষনেই মনে হত, কি লাভ শিখে যদি একটা পয়সা ইনকামই না করতে পারলাম!
কিছুদিন হতাশায় কাটানোর পর ইন্টারনেট থেকে আয় করার চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিলাম। ভাবলাম আমি যা শিখেছি তা অন্যদের শিখাবো। বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় টেক ব্লগে লিখা শুরু করলাম। তবে অ্যাডসেন্স নিয়ে কিছুই লিখিনি কারন আমি নিজেই অ্যাডসেন্স পাই নি। কিছুদিন লিখার পর মানুষের উৎসাহ পেয়ে লিখা চালিয়ে গেলাম। দেখলাম কিছু মানুষ নিয়মিত আমার লিখা পড়ছে আর প্রশংসা করছে। তখন মনে হল যাক সময়টা তাহলে পুরোপুরি জলে যায় নি, কিছুটা কাজে লেগেছে। আমার লিখা পড়তে পড়তে কিছু মানুষ আমার ভক্ত হয়ে যায়। ক্ষুদ্র এই মানুষটার ফেসবুক মেসেজে যখন কেউ লিখতো “ভাই আমি আপনার লিখার ফ্যান হয়ে গেছি” আমি তখন আনন্দে আত্মহারা হয়ে সেই মেসেজটার স্ক্রিন শট নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করে দিতাম। কিছুটা জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর খেয়াল করলাম কঠিন কিছু বিষয় লিখে বুঝাতে পারছিলাম না, কিছু মানুষ কমেন্টে ভিডিও তৈরি করার কথা বলছিলেন। তখনি শুরু হয় আমার ফেলে রাখা ইউটিউব চ্যানেল নিয়ে নতুন করে গবেষণা। কিন্তু এবার উদ্দেশ্য ইনকাম করা নয়, মানুষকে সাহায্য করা। কারন তখনও জানতাম না যে ইউটিউব থেকে ইনকাম করা যায়। হয়তো এই সঠিক উদ্দেশ্যটাই আমার আজকের ছোট সফলতার বুনিয়াদ ছিল।
তবে ঘটা করে এতো কাহিনী বলার পেছনে একটা কারন আছে। আপনারা আমার এই লিখাটা যে সাইটে পড়ছেন সেটি হল আমার ইউটিউব চ্যানেলের নামে খুলা একটি সাইট। এই সাইট নিয়ে আমার তেমন কোন পরিকল্পনা ছিল না। ভেবেছিলাম শুধু খুলে ফেলে রাখবো আর নতুন ভিডিও আসলে মন চাইলে ভিডিওটি সাইটে এমবেড করে দেবো। প্ল্যান মাফিক টানা ১ বছর ধরে একটু একটু সাইটে কাজ করলাম। মাসে একবার হটাৎ মনে পরলে সাইটে ঢুকে ২/১ টা জিনিষ চেঞ্জ করে বের হয়ে যেতাম। অবহেলায় মাঝে মাঝে পাসওয়ার্ডটা পর্যন্ত ভুলে যেতাম। এতোটা অবহেলিত সাইট যখন কোন রকম কমপ্লিট হল তখন সাইটের থিম প্যানেলে অ্যাডসেন্সের কোড বসানোর জায়গা দেখে মনে হল একবার অ্যাডসেন্সে এপ্লাই করে দেখি তো কি হয়! এপ্লাই করে কোডও বসালাম জায়গা মতো। এর ভুলেই গিয়েছিলাম যে আমি এপ্লাই করেছি।
২ দিন পর অন্য কজে সাইটে ঢুকে দেখি আমার হোমপেজে ঝলঝল করছে গুগল অ্যাডসেন্সের অ্যাড। সঙ্গে সঙ্গে ২০১০, ২০১১ আর ২০১২ সাল আমার চোখের সামনে কেমন যেন ফ্ল্যাশ ব্যাক করতে থাকলো। এ এক অন্যরকম অনুভূতি। প্রায় কেঁদেই ফেলেছিলাম, আবার একটু মুচকি হাঁসিও আসলো। মনে মনে বলতে থাকলাম, ওয়েবসাইটে অ্যাডসেন্স নামক সোনার হরিণ অবশেষে পেলাম, তাও আবার ৮ বছর পর!
মোরালঃ
১) আপনি আজকে যা-ই করছেন/শিখছেন, তার ফল হয়তো তৎক্ষণাৎ পাবেন না। কিন্তু হতাশ হবার কিছু নেই, আপনার আজকের এই কাজের ফল কোন না কোন দিন অবশ্যই পাবেন।
২) শত প্রতিবন্ধকতার মাঝেও শিখার ইচ্ছা থাকলে কারও সহযোগিতা ছাড়া আপনি নিজেই যেকোনো কিছু শিখতে পারবেন।
৩) আমাদের কাজের উদ্দেশ্য কেবল টাকা ইনকাম করা হওয়া উচিৎ না। যেকোনো কাজ টাকার চেয়ে বড় একটা উদ্দেশ্য নিয়ে করতে হবে, টাকা এমনিতেই আসবে।
0 Comments