অর্ধ রজনী। মেদিনির গায়ে ঘোর অমানিশা। অদূর অরণ্য থেকে ভেসে আসছে হুক্কাহুক্কার সুর।
ঝিঁঝির পাল তাল মিলাচ্ছে তার সাথে। তবু নিঝুম ঘুমোচ্ছে প্রকৃতি। জেগে আছে শুধু খান পরিবারের জনাকয়েক মানুষ।
খানবাড়ির দেয়ালে আজ ইলেক্ট্রিকের তারকা গাঁথা।
গেইট বাঁধা হয়েছে আসমানি রঙের ঝলমলে কাপড়ে।
গোটা প্রাসাদটাকে মনে হচ্ছে
আগ্রার তাজমহল।
এই মহলের ভেতরে আবার হরেক পদের অজস্র কাঁচা ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে একটা পালঙ্ক।
তার মধ্যখানে লাল বেনারসীর গুণ্ঠন টেনে বসে আছে মিথিলা।
ও আজ এঘরে আসা নববধু।
খান বাড়ির বড় ছেলে মুহিব খানের সাথে আজ তার বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে।
এখন বাসরের পালা।

দরজায় ছিটকিনি এঁটে এক'পা দু'পা করে পালঙ্কের দিকে এগুচ্ছে মুহিব। নিশ্চুপ বসে আছে গুণ্ঠিত মিথিলা। তখনো খানিক কদম বাকি। পালঙ্কের নিচ থেকে হাবিবের আবির্ভাব। হাতে ধারালো ছুড়ি।
হাবিব মুহিবের দু'বছরের ছোট।
আপন ভাই।
বাসর প্রাক্কালে ছোট ভাইয়ের দর্শনে বিস্মিত হয় মুহিব।
বিস্ময়ের ভাব তখনো কাঁটেনি।
লুটিয়ে পড়তে হলো তাকে মাটিতে। ফিনকি দিয়ে রক্ত ঝরছে
তার বুক থেকে।
"আহহহ"
দেয়াল ফাঁটা চিত্‍কার দেয় মিথিলা। কিন্তু এর আগেই হাবিব তার হাতে থাকা রক্তস্নাত ছুড়িটা নিজ নাড়িদেশে দাবিয়ে দেয়।
মিথিলা নির্বাক। সামনে পড়ে আছে দুটি লাশ।
একটুকরো কাগজ প্রবাহিত রক্তে
হাবুডুবু খাচ্ছে।
বাকহারানো মিথিলা তা হাতে নিলো।
পড়া শুরু করলো।
" একভাইয়ের সাথে প্রেম, অন্যজনের সাথে সংসার! এ কেমন তোমার বিচার!
আমি এ বিচার মানিনা।
তাই লাশ দিয়ে গেলাম। যাকে ইচ্ছে তাকে নিয়েই বাসর সমাপ্ত করে নিয়ো।